শিম চাষ বাংলাদেশে একটি লাভজনক কৃষি কার্যক্রম।

 

শিম চাষ বাংলাদেশে একটি লাভজনক কৃষি কার্যক্রম। শিম শীতকালীন সবজি হলেও অনেক স্থানে এটি বছরজুড়ে চাষ করা যায়। নিচে শিম চাষের সাধারণ পদ্ধতি তুলে ধরা হলো:

মাটি ও জলবায়ু:

শিম সাধারণত উর্বর দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটিতে ভালোভাবে জন্মায়। সুনিষ্কাশিত মাটি এবং পানি জমে না এমন জমি শিম চাষের জন্য উপযুক্ত। গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া শিমের চাষের জন্য ভালো। শীতকালে চাষ করলে ফলন বেশি পাওয়া যায়।

বীজ বপন:

  • বীজ বপনের সময়: শিমের বীজ সাধারণত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বপন করা যায়। তবে অঞ্চলভেদে এবং শীতের পরিমাণ অনুযায়ী তা সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে।
  • বীজের পরিমাণ: প্রতি হেক্টরে ২৫-৩০ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়।
  • বীজ শোধন: বীজ বপনের আগে ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করলে গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

জমি প্রস্তুতি:

শিম চাষের জন্য জমি ভালোভাবে চাষ দিতে হবে। প্রথমে জমি ২-৩ বার গভীরভাবে চাষ দিতে হবে এবং পরবর্তীতে জমি সমান ও ঝুরঝুরে করতে হবে। জমির সঠিক নিষ্কাশনের জন্য উঁচু জায়গায় চাষ করা উচিত।

সার প্রয়োগ:

শিমের চাষে সুষম পরিমাণে সার ব্যবহার করতে হবে।

  • গোবর/কম্পোস্ট সার: প্রতি শতাংশ জমিতে ৫০০ কেজি পচা গোবর বা কম্পোস্ট সার।
  • ইউরিয়া: ১৫০-২০০ কেজি।
  • টিএসপি: ১২০-১৩০ কেজি।
  • এমওপি: ১০০-১২০ কেজি। সারের অর্ধেক গোবর, সম্পূর্ণ টিএসপি এবং অর্ধেক এমওপি জমি তৈরির সময় মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকী সার চারা গাছ বড় হওয়ার সময় প্রয়োগ করতে হবে।

রোপণ পদ্ধতি:

  • প্রতি গাছের মাঝে ৫০-৬০ সেন্টিমিটার দূরত্ব রাখতে হবে এবং সারির মাঝে ১ মিটার ফাঁকা রাখতে হবে।
  • এক স্থানে ২-৩টি বীজ বপন করতে হয়। বীজের গভীরতা হবে ৩-৫ সেন্টিমিটার।

যত্ন ও পরিচর্যা:

  • সেচ: শিমের চাষে পর্যাপ্ত সেচ প্রয়োজন। গাছ লাগানোর পর, ফুল আসার সময় এবং ফল ধরার সময় সেচ দিতে হয়।
  • নিরানি: গাছের চারপাশে আগাছা পরিষ্কার করা এবং মাটি আলগা করা দরকার।
  • মাচা দেওয়া: শিমের গাছ লতানো হওয়ায়, মাচা দিলে গাছ ভালোভাবে বাড়ে এবং ফল বেশি হয়।

রোগ ও পোকামাকড়:

  • শিম গাছ বিভিন্ন পোকামাকড় এবং রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যেমন: পাতা ঝলসানো রোগ, পাউডারি মিলডিউ, জাবপোকা ইত্যাদি। ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে এ সমস্যা সমাধান করা যায়।

ফলন:

শিম গাছ লাগানোর ৪০-৫০ দিনের মধ্যে ফল ধরতে শুরু করে। সাধারণত প্রতি গাছে ১.৫ থেকে ৩ কেজি শিম পাওয়া যায়।

সংগ্রহ ও সংরক্ষণ:

শিম যখন সম্পূর্ণ পরিণত হয়, তখন তা সংগ্রহ করা উচিত। সাধারণত ৭-১০ দিন পর পর শিম সংগ্রহ করতে হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url