বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে ‘হারু পাট্টি’ (পড়ুন পার্টি) কথাটা খুবই প্রচলিত। হেরে যাওয়া দলকে ‘হারু পাট্টি’ বলেই অবহিত করা হয়। তো ক্রিকেট বিশ্ব্বকাপ ২০২৩-এ আজ সেই ‘দুই হারু পাট্টি’র লড়াই। লখনৌয়ের অটল বিহারি বাজপেয়ি একানা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা।লড়াইটা আসলে দুই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের। ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের ১২ আসরের মধ্যে ৫ বারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সব মিলে ফাইনাল খেলেছে ৭ বার। বিপরীতে শ্রীলঙ্কা একবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। সব মিলে ফাইনাল খেলেছে ৩ বার। এমন দুই দলের লড়াইকে ‘হারু পার্টি’র লড়াই আখ্যায়িত করার কারণটাও ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে স্পষ্টই।
এবারের বিশ্বকাপে দুই দলই দুটি করে ম্যাচ খেলেছে। দুই দলই হেরেছে নিজেদের দুই ম্যাচেই। যার অর্থ, আজ দুই দল মুখোমুখি হচ্ছে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে। দুই দলের সামনেই একই সমীকরণ— সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে আজ জিততেই হবে! মানে লখনৌয়ে আজ যারা জিতবে, তারা সেমিফাইনালের লড়াইয়ে টিকে থাকবে। হারলে পড়ে যাবে একেবারে খাদের কিনারে!
বোঝাই যাচ্ছে লখনৌয়ের আজকের দ্বৈরথটি দুই দলের জন্যই মহাগুরুত্বপূর্ণ এক পরীক্ষা। যে পরীক্ষায় পাশ করার জন্য দুই দলই সমানভাবে মরিয়া। কিন্তু দুই দলই তো আর পাশ করতে পারবে না। পাশ করবে এক দল। দুই দলই তাই ‘জয়’ মুঠোবন্দি করতে মরণকামড় বসাতে চাইবে। তবে দলীয় শক্তিমত্তা, ইতিহাস, পরিসংখ্যান, মুখোমুখি সাক্ষাত্—সবদিক থেকেই এগিয়ে প্যাট কামিন্সের অস্ট্রেলিয়া। দ্বৈরথটা যখন বিশ্বকাপ মঞ্চের, তখন শ্রীলঙ্কার একমাত্র অনুপ্রেরণা ১৯৯৬ বিশ্বকাপের সেই ফাইনাল।
ক্রিকেট বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত ১১ বার মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে ৮টিতেই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা জিতেছে ২ বার, অন্য ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়েছে বৃষ্টিতে। তবে এই পরিসংখ্যানের মধ্যেও একটা ‘কিন্তু’ আছে। অসিদের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার যে ২টি জয়, তার একটি ‘ওয়াকওভার’ সূত্রে। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার মাটিতে গ্রুপপর্বের ম্যাচটি খেলতে যেতে অস্বীকৃতি জানায় অস্ট্রেলিয়া। মানে শ্রীলঙ্কায় খেলতে না গিয়ে অসিরা ম্যাচটা স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে ‘ওয়াকওভার’ দিয়ে দেয়। ফলে মাঠে না নেমেই শ্রীলঙ্কা পেয়ে যায় জয়। পরে ঐ বিশ্বকাপেরই ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথম এবং একমাত্র বিশ্বকাপটি জেতে শ্রীলঙ্কা। মানে মাঠের খেলায় অসিদের বিপক্ষে লঙ্কানদের জয় ঐ একটিই।
আজ মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে লাহোরের সেই ফাইনালের জয়টিই শ্রীলঙ্কানদের জন্য একমাত্র অনুপ্রেরণার উত্সব। বিপরীতে অসিদের অনুপ্রেরণার উেসর অভাব নেই। বিশ্বকাপের মতো সামগ্রিক ওয়ানডে পরিসংখ্যানেও এগিয়ে অসিরা। ওয়ানডেতে দুই দলের ১০২ সাক্ষাতের ৬৩টিতেই জিতেছে তারা। শ্রীলঙ্কা জিতেছে মাত্র ৩৫ ম্যাচে। আজ মহাগুরুত্বপূর্ণ দ্বৈরথ জিতে সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকে কারা, সেটাই দেখার।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url