ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিবাহবিচ্ছেদের কথা জানিয়েছেন আরও যেসব তারকা

 

হঠাৎ করেই সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেন চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ। বেশ কিছুদিন আগে থেকে শোনা যাচ্ছিল এই দম্পতির বিচ্ছেদের গুঞ্জন। তবে এ নিয়ে চুপ ছিলেন এই তারকা। এর আগেও গত কয়েক বছরে দেশের বেশ কয়েকজন তারকার বিবাহবিচ্ছেদের কথা শোনা গেলেও তাঁরা চুপ ছিলেন। পরে এই তারকারা ফেসবুকে বিবাহবিচ্ছেদের কথা জানিয়েছিলেন।

সাত বছর আগের কথা। তখন দেশের জনপ্রিয় জুটি তাহসান ও মিথিলার বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে নানা কথা শোনা যাচ্ছিল। তাঁরা আলাদাও থাকছিলেন। কিন্তু সম্পর্ক আছে কি না, এটা নিয়ে কেউ গণমাধ্যমের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতেন না। পরে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তাহসান খান বিচ্ছেদের কথা লিখেছিলেন।

তাহসান ও মিথিলা বিচ্ছেদের খবর প্রথম ফেসবুক জানা যায়। ছবি: সংগৃহীত
তাহসান ও মিথিলা বিচ্ছেদের খবর প্রথম ফেসবুক জানা যায়। ছবি: সংগৃহীত

তিনি লেখেন, ‘দুঃখের সঙ্গে আমরা জানাচ্ছি, আমাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। বেশ কয়েক মাস ধরেই আমরা মতপার্থক্য নিয়ে কথা বলেছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের বিচ্ছেদ হওয়াই শ্রেয়। এখানে সামাজিক অনেক বিষয় জড়িত।’

এ সময় তাহসান ভক্তদের উদ্দেশে আরও লিখেছেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি, সম্ভবত এমন ঘটনার জন্য আপনারা প্রস্তুত ছিলেন না। আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা সব সময় সম্পর্কের মধ্যে একের অন্যের প্রতি সম্মান ও মর্যাদা বজায় রেখেছিলাম, ভবিষ্যতেও তা–ই থাকবে।’ ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তাহসান ও মিথিলা। তাঁদের একমাত্র সন্তান আইরা তেহরীম খানকে উভয়েই দেখাশোনা করেন।

শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি। ছবি: প্রথম আলো
শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি। ছবি: প্রথম আলো

আলোচিত বিবাহবিচ্ছেদের আরেকটি ছিল অভিনেত্রী শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নির বিচ্ছেদ। তাঁদের সংসার ভালোই চলছিল। এর মধ্যে হঠাৎ করেই শোনা যায় বিচ্ছেদের খবরটি। ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি প্রথম সম্পর্ক নিয়ে মুখ খোলেন।
তিন্নি ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘আমার সঙ্গে অন্যায় হলো। সাদ এখন নিজের প্রতারণার কথা প্রকাশ্যে ঔদ্ধত্য নিয়ে বলে বেড়ায়। এটা তার অসুস্থতা এবং সে আমাকে দিনরাত বোকা বানিয়ে অপকর্ম করে বেড়ায়। শুধু তা–ই নয়, সে আমাকে বন্দী রেখে রীতিমতো নির্যাতন করেছে এবং নিয়মিত এই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তার বাসা ছেড়ে দিয়েছি।’ ২০১৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সাদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিন্নি।

ক্লোজআপ ওয়ান তারকা গায়িকা পুতুল ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ নুরুল ইসলামকে বিয়ে করেন। কানাডাপ্রবাসী স্বামীর সঙ্গে বিয়ের কয়েক মাস পরই বিচ্ছেদ হয়ে যায়। দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকীতে কাছের অনেকেই শুভকামনা জানালে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘দুই বছর আগে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলাম, ঢুকেছিলাম যুগল জীবনযাপনে। বিবাহিত জীবনের খুব অল্প দিনের মাথায় বুঝেছিলাম, পথটা কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। এই পথটা ঠিক যেন আমার কল্পনার সেই পথটা নয়, যে পথে আনন্দে হেঁটে নেওয়া যায় অক্লেশে। মত আর আদর্শিক পার্থক্যগুলো নিছক পার্থক্য থেকে রূপ নিচ্ছিল চূড়ান্ত দ্বন্দ্বে। সম্পর্ক মুমূর্ষু হচ্ছিল, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল আমার সৃষ্টিশীল সত্তা।’

গায়িকা পুতুল ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ নুরুল ইসলামকে বিয়ে করেন। ছবি: ফেসবুক
গায়িকা পুতুল ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ নুরুল ইসলামকে বিয়ে করেন। ছবি: ফেসবুক

পুতুল আরও লিখেছিলেন, ‘বিচ্ছিন্নতার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তখনই। হয়েছিল বিচ্ছেদ। অতঃপর আবার আমার সেই একক জীবনে ফেরা, সুর আর সাহিত্যের সঙ্গে নির্বিঘ্ন একক সংসার। বিয়েটা ঘটা করে হওয়ার বিষয়, বিচ্ছেদে ঘটা করার কিছু নেই। বিচ্ছেদে বিষাদের সুর বাজে আত্মায়। সেই সুর মনপাড়াতে একলা বাজাই ভালো। সবাইকে নিয়ে সেই বিচ্ছেদি সুর উদ্‌যাপনের কিছু নেই। কিন্তু চূড়ান্ত সত্য এই, সেই বিষাদে কোথাও মুক্তির গন্ধ মিশে থাকে, থাকে মুমূর্ষুতার অবসানে লম্বা করে নিশ্বাস নেওয়া। জীবনটা বেঁচে ওঠার সুযোগ পায় আরও একবার। সেই জীবনটাকে বাঁচিয়ে দেওয়া জীবনের প্রতিই সুবিচার বলে বিশ্বাস করি।’

বিয়ের ঠিক এক বছর ৯ মাসের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটেছে অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার। প্রেমিক হারুন অর রশীদ অপুকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু সংসার টেকেনি। ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর বিবাহবিচ্ছেদ হয় এই তারকার। দুজনের সম্মতিতেই এ বিচ্ছেদ হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন শবনম ফারিয়া।

শবনম ফারিয়ার ও হারুন অর রশীদ অপু। ছবি: ফেসবুক
শবনম ফারিয়ার ও হারুন অর রশীদ অপু। ছবি: ফেসবুক

বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে ফারিয়া এক সন্ধ্যায় ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘মানুষের জীবন নদীর মতো—কখনো জোয়ার, কখনো ভাটা। কখনো বৃষ্টিতে পানি বেড়ে যায়, শীতকালে পানি শুকিয়ে যায়। আমাদের জীবনেও এমনটি হয়েছে! আমাদের জীবনে কিছু মানুষ আসে; কেউ কেউ স্থায়ী হয়, কেউ কেউ কিছু কারণে স্থায়িত্ব ধরে রাখতে পারে না!’ এ সময় তিনি আরও লিখেছেন, ‘বছরখানেক সময় নিয়েছি পরস্পরকে বুঝতে! ফাইনালি আল্লাহ যা করেন, ভালোর জন্যই করেন ভেবে আমরা আমাদের প্রায় আড়াই বছরের বৈবাহিক জীবনের অবসান ঘটিয়ে আবারও পাঁচ বছরের পুরোনো বন্ধুত্বে ফিরে গেছি। বিবাহবিচ্ছেদ হয়, কিন্তু ভালোবাসার বিচ্ছেদ নেই! বন্ধুত্বের বিচ্ছেদ নেই!’

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ভালোবেসে সিলেটের ব্যবসায়ী মাহমুদ পারভেজ অপুকে ২০১৬ সালে বিয়ে করেন। পরে তিনি ২০২১ সালে হঠাৎ করেই ভক্তদের জানান, অপুর সঙ্গে আর থাকছেন না। তাঁরা বিবাহবিচ্ছেদ করছেন।

পরবর্তী সময়ে মাহিয়া ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাকিবকে বিয়ে করেন। দুই বছর সংসার করার পর অভিনেত্রী দ্বিতীয় বিয়ের বিচ্ছেদের কথাও ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় জানিয়েছিলেন। মাহি সেই সময় বলেছিলেন, ‘আমরা দুজন (রাকিব ও মাহি) মিলেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তবে রাকিব খুব ভালো মানুষ। তাকে আমি সম্মান করি। অনেক কেয়ারিং সে। খুব দ্রুতই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদে যাচ্ছি। কবে আর কীভাবে হবে, সেটাও দুজন মিলেই ঠিক করব। আপনারা আমার ছেলে ফারিশের জন্য দোয়া করবেন। যেন ওকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।’

রাকিব সরকার ও মাহিয়া মাহি। ফেসবুক থেকে
রাকিব সরকার ও মাহিয়া মাহি। ফেসবুক থেকে

অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ ও গায়ক এস আই টুটুলের দীর্ঘ দুই দশকের সংসারের বিচ্ছেদ হয় ২০২১ সালে। কী কারণে এটা ঘটল, তা নিয়ে এত দিন তাঁদের কেউ মুখ খোলেননি। কেন বিচ্ছেদ হলো, সম্প্রতি সেই প্রসঙ্গে এক ভিডিও বার্তায় অভিনেত্রী জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় ধরে তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়া না হওয়া থেকেই এই বিচ্ছেদ।
এ সময় তানিয়া আরও বলেছিলেন, ‘আমাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। কিন্তু আমি মিডিয়ার অনেকের পারসোনাল লাইফ সম্পর্কে জানি। তারা একসঙ্গে হাসছে, খেলছে, ঘুরছে-ফিরছে, কিন্তু তাদের ভেতর যে কতটা তোলপাড়, সেটা কেউ জানে না। তাদের জন্য অনেকেই দোয়া করছে, বলছে সুখী পরিবার, কিন্তু ভেতরের খবর কেউ জানে না। এটা দর্শকদের জন্য বলছি। আমার জায়গা আমি স্ট্রংলি বলেছি।’

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url