নোয়াখালীতে ধীরে নামছে বন্যার পানি, বেড়েছে পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা
নোয়াখালীতে বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি উজানের পানির চাপ কমে আসায় আটটি উপজেলায়ই বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। আজ সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় উপজেলা ভেদে তিন থেকে আট ইঞ্চি পরিমাণ পানি কমেছে। এতে বন্যার্ত বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলার আকাশে মেঘের আনাগোনা থাকলেও বৃষ্টি হয়নি; বরং রৌদ্রের প্রখরতা বেড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পানি কমলেও জেলা শহর মাইজদীসহ বন্যাকবলিত আটটি উপজেলার সব কটিতেই দুপুর পর্যন্ত হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি আছে। পানি নিষ্কাশনের খাল ও অন্যান্য জলাধার বেদখল ও ভরাট হওয়ায় পানি নামছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। ধারণা করা হচ্ছে, এই হারে সম্পূর্ণ বন্যার পানি নামতে এক সপ্তাহের মতো সময় লাগবে।
সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর গ্রাম থেকে মামলার কাজে জজ আদালতে এসেছেন বিচারপ্রার্থী সেকান্দর মিয়া (৭০)। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গ্রামে বাড়িঘরে পানি। কোথাও হাঁটুসমান, কোথাও এখনো কোমরসমান পানি। এখানেও (আদালতে) এসে দেখেন পানি। তবে এবারের মতো পানি জীবনে কখনো দেখেননি।
জেলা শহর মাইজদীর প্রধান সড়কের দুই পাশের অসংখ্য দোকানের ভেতর ও সামনে পানি জমে আছে। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভোগান্তি কমেনি। পানিবন্দী অবস্থায় আছে শহরের পৌর বাজারের কয়েকশ ব্যবসায়ী। তাঁদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কেনা-বেচা নেই বললেই চলে। বন্যার পানিতে সড়কগুলো ডুবে থাকায় বাসিন্দারা চলাচলে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছে
বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও জেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় মানুষের সংখ্যা গতকাল আরও বেড়েছে। বেড়েছে পানিবন্দী মানুষের সংখ্যাও। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে জেলার ১ হাজার ৩৬৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৯০ হাজার ৫১৩ জন মানুষ আশ্রয়ে আছেন। এ ছাড়া এখনো ২০ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় আছে। বন্যায় এ পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সরকারি সহায়তা হিসেবে বন্যার্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে নগদ ৪৫ লাখ টাকা ও এক হাজার ২০৭ টন চাল।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url