আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে আগুনে দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা, আসামি শেখ হাসিনা

 

কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলামের বাড়িতে আগুনে পুড়িয়ে দুজনকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এতে সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদসহ ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার দুপুরে মো. মতিউর রহমান নামের এক ব্যক্তি মামলাটি করেন বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা। ৪ আগস্ট ওই ঘটনায় মারা যাওয়া দুজন হলেন জুলকার হোসাইন (৩৮) ও অঞ্জনা বেগম (২৮)। জুলকার আশফাকুল ইসলামের বাড়ির দারোয়ান ও অঞ্জনা গৃহকর্মী ছিলেন। মতিউর রহমান কিশোরগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি। নিহত জুলফিকার তাঁর দল করতেন বলে দাবি করেছেন মতিউর।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি ঘিরে ওই দিন কিশোরগঞ্জে বিক্ষোভকারী, পুলিশ ও ছাত্রলীগ–আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এর একপর্যায়ে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আশফাকুল ইসলামের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।


মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ৪ আগস্ট বেলা ২টার দিকে ছাত্র-জনতা বৈষম্যবিরোধী মিছিল নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের স্টেশন রোডে জড়ো হন। তখন ১ থেকে ৯ নম্বর আসামির হুকুমে ও প্ররোচনায় অন্য আসামিরা দেশি অস্ত্র, পেট্রলবোমা, ককটেল, পাইপগান, শটগান, পিস্তল ইত্যাদি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের দিক থেকে হামলা করে।

আসামি রাসেল আহমেদ ওরফে তুহিন, শফিকুল আলম, শফিকুল ইসলাম ওরফে লিমন ঢালী, আল জুবায়েদ খান ওরফে নিয়াজ, মো. মাহফুজ, ফয়েজ ওমান খান, সাইফুল ইসলাম, মাজহারুল ইসলাম, তৌফিক, সানা, মুরসালিন খান, তাজবীর, সুমন মোল্লা, আমিনুল ইসলাম ওরফে বকুলসহ অন্যরা তাঁদের হাতে থাকা শটগান, পাইপগান দিয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যার উদ্দেশ্যে সরাসরি গুলি করেন।

এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, এতে মামলার বাদীসহ ছাত্র-জনতা আহত হয়ে জীবন বাঁচতে দৌড়াতে থাকেন। পরে পার্শ্ববর্তী খরমপট্টি এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম ওরফে টিটুর বাসার ভেতরে ও সামনের রাস্তায় আশ্রয় নেন। মিছিলকারীরা এই বাসায় অবস্থান করছেন খবরে আসামিরা অস্ত্র নিয়ে বাদীসহ ছাত্র–জনতার পিছু ধাওয়া করেন। এ সময় আসামিরা হাতে থাকা কনটেইনার থেকে পেট্রল ঢেলে দেন এবং এক আসামি ওই বাসায় আগুন ধরিয়ে দেন। এই আগুনে বাসায় থাকা জুলকার হোসাইন (৩৮) ও অঞ্জনা বেগম (২৮) পুড়ে মারা যান।


মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি অন্য আসামিরা হলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহমদ, পুলিশের সাবেক আইজি ও কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন। ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ সদর থানার ওসি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, যেভাবে বাদী এজাহার দিয়েছেন, সেভাবেই মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url