পঞ্চগড়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ ৮ নেতার বাড়িতে ভাঙচুর

 

পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত ও তাঁর মা সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য রেজিয়া ইসলামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগে পুড়ছে একটি গাড়িছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পঞ্চগড়ে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও দলের অন্তত আট নেতার বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া জেলা শহরের কয়েকটি দোকানসহ অন্তত ১৫টি মোটরসাইকেলে ভাঙচুর ও আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে জেলা জজকোর্টের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। সেখানে আরও আন্দোলনকারীরা যুক্ত হন। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা শহরের পোস্টার-ব্যানার, সিসি ক্যামেরাসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর শুরু করেন। বেলা ১১টার পর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ কার্যায়লয়সংলগ্ন পৌর পোস্ট অফিসেও আগুন দেওয়া হয়। এদিকে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে একদল আন্দোলনকারী অবস্থান নিলেও অপর একটি অংশ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট ও তাঁর মা সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য (৩০১) রেজিয়া ইসলামের বাড়িতে আগুন দেয়। এ সময় তাঁদের ব্যবহৃত দুটি ব্যক্তিগত গাড়ি ও সেখানে থাকা তিনটি মোটরসাইকেল পুড়ে যায়।

পরে আন্দোলনকারীরা শহরের জালাসী এলাকায় পঞ্চগড় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, পঞ্চগড় পৌরসভার মেয়র ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া খাতুন, পৌর কাউন্সিল সফিকুল ইসলাম, তাঁর ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী আল তারিক, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মো. নোমান হাসান, পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা হাসনাত হামিদুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

আন্দোলনকারীদের তাণ্ডবের সময় পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়নি। বেশির ভাগ পুলিশ সদস্যকে সদর থানার সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায়। ঘটনার সময় গণমাধ্যমকর্মীরা ছবি তুলতে বা ভিডিও নিতে বাধার মুখে পড়েন।

এদিকে চৌরঙ্গী মোড়ে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীরা দুপুরের পর বিক্ষোভ শেষ করে চলে যান। তবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত হামলাকারীরা শহরের বিভিন্নে এলাকায় তাণ্ডব চালান। এরপর ধীরে ধীরে হামলাকারীরা চলে গেলে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল দিতে শুরু করেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল।

পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা রোববার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, হামলার ঘটনায় জেলা শহরের অনেক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশ মানুষের জানমাল রক্ষায় কোনো ধরনের প্রাণহানি ছাড়াই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে। এই মুহূর্তে পঞ্চগড়ের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এখন সবার শান্ত থাকাটাই জরুরি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url