ঘুষ যেভাবে বন্ধ করবেন ড. ইউনূস | Dr . Yunus
ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি নোবেল বিজয়ী এবং ক্ষুদ্রঋণ আন্দোলনের পথিকৃৎ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত, ঘুষ এবং দুর্নীতি বন্ধে তার বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি এবং কৌশল শেয়ার করেছেন। তার মতে, ঘুষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে নৈতিক নেতৃত্ব এবং স্বচ্ছ প্রশাসনিক ব্যবস্থা।
ড. ইউনূস মনে করেন যে, দুর্নীতির মূল কারণ হলো নৈতিকতার অভাব এবং দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামো। তাই তিনি ঘুষ বন্ধে প্রথমে নৈতিক শিক্ষা এবং শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, সমাজে সৎ ও নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যাতে মানুষ তাদের নৈতিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হয় এবং ঘুষের প্রভাব থেকে দূরে থাকে। এই মূল্যবোধ গড়ে তোলার জন্য, শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্তি এবং সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
প্রযুক্তির ব্যবহারকেও ড. ইউনূস ঘুষ রোধের একটি কার্যকর মাধ্যম হিসেবে দেখেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, ডিজিটাল লেনদেন এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঘুষ দেওয়া-নেওয়ার প্রক্রিয়া জটিল এবং অসম্ভব করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, সরকারি সেবা এবং সুযোগ-সুবিধা ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে সরাসরি জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া গেলে মধ্যস্বত্বভোগীদের হস্তক্ষেপ কমে যায় এবং ঘুষের সুযোগ কমে।
ড. ইউনূস আরও উল্লেখ করেন যে, ঘুষ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সরকার, জনগণ, এবং নাগরিক সমাজকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের মধ্যে দায়িত্বশীলতা বাড়ানো ছাড়া ঘুষের বিরুদ্ধে টেকসই কোনো সমাধান সম্ভব নয়। সরকার যদি আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ঘুষ বন্ধ করতে চায়, তাহলে জনগণকেও তাদের ভূমিকা পালন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে প্রতিবাদ করা, ঘুষ গ্রহণ না করা এবং সততার সঙ্গে জীবনযাপন করা।
ড. ইউনূসের মতে, যদি সরকার, সমাজ এবং নাগরিকরা একযোগে কাজ করে, তাহলে ঘুষ এবং দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব। তার এই দৃষ্টিভঙ্গি কেবল বাংলাদেশ নয়, বিশ্বজুড়ে দুর্নীতি মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url