পানিবন্দী মেয়েকে আনতে যাওয়ার পথে ভেসে যান বাবা, ৬ দিন পর মিলল লাশ

 


মেয়েকে উদ্ধার করতে বের হয়ে পানিতে ভেসে যান সাহাব উদ্দিনছবি: সংগৃহীত

ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় পানিবন্দী মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি থেকে আনতে যাওয়ার পথে পানির তীব্র স্রোতে ভেসে যান সাহাব উদ্দিন (৬৫) নামের এক ব্যক্তি। ছয় দিন পর তাঁর মরদেহ পাওয়া যায় পাশের ফুলগাজী উপজেলার ঘনিয়া মোড়া গ্রামে রেললাইনের কাছে। তিনি পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের উত্তর ধনিকুন্ডা গ্রামের বদুবাড়ির বাসিন্দা।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে এবং একই দিন বিকেলেই পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। পরিবারে তাঁর স্ত্রী, চার ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে।


স্থানীয় সূত্র ও নিহত ব্যক্তির পরিবার সূত্রে জানা যায়, সাহাব উদ্দিনের মেয়ের শ্বশুরবাড়ি পাশের সলিয়া এলাকায়। তাঁর মেয়ের স্বামী চাকরিসূত্রে ঢাকায় থাকেন। মেয়ে একমাত্র নাতনিকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই থাকেন। ২১ আগস্ট মেয়ে ও নাতনিকে উদ্ধারের জন্য পরশুরাম উপজেলার সলিয়া এলাকার উদ্দেশে তাঁর ঘর থেকে বের হন। পথে দারার ব্রিজ এলাকায় গিয়ে দেখেন, তীব্র স্রোত। 


ওই এলাকা পার হতে গিয়ে পানিতে পড়ে ভেসে যান। তার পর থেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি।  গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ফুলগাজীর পশ্চিম ঘনিয়া মোড়া এলাকায় রেললাইনের পাশে মাছ ধরতে যাওয়া লোকজন তাঁর মরদেহ ভাসতে দেখে ফুলগাজী থানার পুলিশকে খবর দেন। 


পরে স্বজনেরা খবর পেয়ে ওই স্থানে পৌঁছে তাঁর লাশ শনাক্ত করেন এবং তাঁর মরদেহ নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।

নিহত সাহাব উদ্দিনের ছেলে সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার ছোট বোন তারিনকে উদ্ধারের জন্য বের হয়ে বাবা পানির স্রোতে ভেসে গেছেন। 


পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোথাও তাঁর সন্ধান পাইনি। এভাবে বাবাকে হারাতে হবে, কখনো ভাবিনি।’ তিনি জানান, পরে তাঁর বোন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেন।

পরশুরাম উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুল হালিম বলেন, বন্যায় সাহাব উদ্দিন ছাড়াও গত বৃহস্পতিবার দুপুরে  মির্জানগর ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেন (৪০) নামের অপর একজনও তীব্র স্রোতে ভেসে যান। গত রোববার তাঁর লাশ পাওয়া গেছে।


ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে নিহত সাহাব উদ্দিনের মরদেহ উদ্ধারের পর উপজেলার ঘনিয়া মোড়া গ্রামে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এর মধ্যে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে ওই স্থানে পৌঁছে মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে তাঁদের বাড়ি নিয়ে গেছেন এবং পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url